• মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:০৯
সর্বশেষ :
ফুলকপি একটি পুষ্টিকর সবজি, যা শরীরের জন্য অনেক উপকারী। ফরিদপুরে ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট আটক, ১৫ দিনের কারাদণ্ড | চাঁদা তুলতে গিয়ে ছাত্রদল নেতাসহ আটক ৩ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ঢাকা-ময়মনসিংহে ট্রেন চলাচল বন্ধ বাউল আবুল সরকারের মুক্তির দাবিতে কিশোরগঞ্জে সার্বজনীন মানববন্ধন ময়মনসিংহে হাসপাতাল-ক্লিনিকে র‌্যাবের অভিযান , ৫ লাখ টাকা জরিমানা উপকূলীয় শ্যামনগর, আশাশুনি ইউনিয়ন পরিষদের রূপকল্প ও উন্নয়ন পরিকল্পনায় প্রশিক্ষণ কর্মশালা কালিগঞ্জ থেকে ভেটখালী পর্যন্ত রাস্তা ৩৪ ফুট প্রশস্ত করার দাবিতে শ্যামনগরে মানববন্ধন ডিজিটাল সহিংসতা প্রতিরোধে শ্যামনগরে র‍্যালি, মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন নির্বাচিত হতে পারলে খাজরা ইউনিয়নে জলাবদ্ধতা ও কোনো কাঁচা রাস্তা : সাবেক এমপি কাজী আলাউদ্দিন

নরেন্দ্র মোদীর দেওয়া উপহার স্বর্ণের মুকুট যশোরেশ্বরী কালী মন্দির থেকে চুরি

এস এম মিজানুর রহমান শ্যামনগর, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি / ১৬৫ দেখেছেন:
পাবলিশ: বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর, ২০২৪
স্বর্ণের মুকুট চুরি

শ্যামনগরের ঐতিহাসিক শ্রী শ্রী যশোরেশ্বরী কালী মন্দিরের ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির উপহার‘কালি মা’য়ের মাথায় থাকা স্বর্ণের মুকুট চুরির অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার দুপুর দুইটা থেকে তিনটার মধ্যে পুরোহিত ও সেবায়েতের অনুপস্থিতির সুযোগে দুর্ধর্ষ্য এ চুরি ঘটনা ঘটে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০২১ সালের ফেব্রয়ারী মাসে উক্ত মন্দির পরিদর্শনকালে ঈশ্বরীপুর  যশোরেশ্বরী মন্দিরের ভিতরে কালি মা’য়ের মাথায় উপঢৌকন হিসেবে উক্ত মুকুট পরিয়ে দিয়েছিলেন। এখবর জানার পর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছে রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চালাচ্ছেন।
এদিকে মন্দিরে ধাকা সিসি ক্যামেরায় ধারণকৃত ফুটেজে দেখা গেছে ২৪/৩৫ বছরের এক যুবক দুপুর দুইটা ৪৯ মিনিটে মন্দিরে প্রবেশ করে। এসময় স্বাভাবিকভাবে সে মন্দিরে ঢুকে ‘কালি মা’য়ের পিছনে দাড়িয়ে মুহুর্তের মধ্যে মুকুট খুলে নিয়ে ‘টি’ শার্টের মধ্যে ঢুকিয়ে নেয়। জিন্সের প্যান্ট ও সাদা ‘টি’ শার্ট পরিহিত ঐ যুবক মুকুট খুলে নেয়ার আগে এক সেকেন্ডের জন্য পাশে কেউ রয়েছে কিনা পর্যবেক্ষন করলেও তাকে কোন রকম বিচলিত মনে হয়নি। সমগ্র ঘটনা মাত্র ১০/১২ সেকেন্ডের মধ্যে ঘটেছে বলে ভিডিও ফুটেজে স্পষ্ট প্রমান মিলেছে। মন্দিরে প্রবেশ করে মুকুট নেয়া যুবককে বেশ প্রশিক্ষিত ও পরিকল্পনামাফিক ,সে কাজটি করেছে বলে ধারনার কথা জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
প্রসংগত উল্লেখ্য সনাতন ধর্মালম্বীদের মতে ‘মা কালি’র একান্ন পীঠের এক পীঠকে কেন্দ্র করে শ্যামনগর উপজেলা সদর থেকে মাত্র কিলোমিটার দুরবর্তী  ঈশ্বরীপুর গ্রামে গড়ে ওঠে শ্রী শ্রী যশোরেশরী কালী মন্দির। প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে বছরের বিভিন্ন সময়ে দেশ বিদেশের অসংখ্য সনাতন ধর্মের দর্শনার্থী উক্ত মন্দিরে থাকা ‘কালি মা’য়ের দর্শনসহ পুঁজা দিতে আসেন।
জানা যায় বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে মন্দিরে তালা লাগিয়ে বাড়িতে চলে যায় পুরোহিত দিলীপ ব্যানার্জী। একপর্যায়ে দুপুর আড়াইটার সময় মন্দিরের সেবায়েতের দায়িত্বে থাকা রেখা রানী পুঁজার কাজে ব্যবহৃত প্লেট ও গ্লাস পরিস্কারের জন্য মন্দিরের প্রবেশদ্বারের চাবি খুলে দেয়। এসময় তিনি কিছু সরঞ্জামাদী পাশের ভবনে রেখে বাকি জিনিসপত্র নিতে পুনরায় মন্দিরে ঢুকে ‘কালি মা’য়ের মাথার মুকুট দেখতে না পেয়ে বিষয়টি সকলকে জানান।
এবিষয়ে পুরোহিত দিলীপ ব্যানার্জী বলেন তিনি দুপুর দুইটার একটু আগে মন্দিরে তালা লাগিয়ে বাড়িতে যান। এসময় সেবায়েতের দায়িত্বে থাকা রেখা রানীকে চাবি দিয়ে ভিতরের অপরিস্কার সরঞ্জামাদীসমুহ পরিস্কারের নির্দেশনা দেন। দিলীপ ব্যানার্জী আরও জানান তিনি বাড়িতে যাওয়ার প্রায় ৩০/৪০ মিনিট পরে দর্শনার্থীদের একজনের মাধ্যমে মা’য়ের মাথার মুকুট চুরির খবর পান।
সেবায়েতের দায়িত্বরত রেখা রানী বলেন তিনি মন্দিরের মুল গেটের চাবি খুলে অপরিস্কার জিনিসপত্র পাশের কক্ষে রাখতে যান। দুই/তিন মিনিটের মধ্যে ফিরে অপরাপর জিনিসপত্র নিতে এসে মায়ের মাথার মুকুট চুরির বিষয়টি বুঝতে পারেন।
এদিকে ঘটনার পর স্থানীয়রা ‘কালি মা’য়ের মুকুট চুরি জন্য পুরোহিতকে দায়ি করেছেন।  ইশ্বরীপুর এ সোবহান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক স্বপন মন্ডল জানান চুরির বিষয়টি তিনটার আগে সবাই জানলেও পুরোহিত প্রায় দুই আড়াই ঘন্টা বিষয়টি চেপে গিয়েছিলেন। এমনকি শুরুতে তিনি ভিডিও ফুটেজ দেখাতে আপত্তি করেন। ঘটনার পরপরই ভিডিও ফুটেজ দেখার সুযোগ মিললে উপস্থিত দর্শনার্থীদের সহায়তায় হয়তবা চোরকে চিহ্নিত করা সহজ ছিল।
এদিকে স্থানীয় একাধিক সুত্র নিশ্চিত করে জানায় মন্দিরের সেবায়েত পদ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দু’পক্ষের মধ্যে দ্বদ্ব চলছে। প্রায় এক বছর পুর্বে মন্দিরের দেখভালকে কেন্দ্র করে সেবায়েত রেখা রানীকে পিটিয়ে আহত করারও ঘটনা ঘটেছিল। রেখা রানীকে মন্দির থেকে বিতাড়িত করতে একটি পক্ষ অনেকদিন ধরে তৎপর ছিল। এছাড়া মন্দিরের অনুকুলে উপার্জিত অর্থ-কড়ির মালিকানা নিয়েও স্থানীয় প্রভাবশালীদের মধ্যে দ্বদ্ব চলছে বলেও একাধিক সুত্রের দাবি।
এসব বিষয়ে শ্যামনগর থানার ওসি(তদন্ত) ফকির তাইজুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ সুপারসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌছে রহস্য উম্মোচনে কাজ শুরু করেছেন। এছাড়া সেনাবাহিনীর কালিগঞ্জ-শ্যামনগরের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাগন ঘটনাস্থলে পৌছে তদন্ত শুরু করেছেন বলেও তিনি নিশ্চিত করেন।


এই বিভাগের আরো খবর
https://www.kaabait.com